বিদেশে অবস্থানরত প্রবাসীদের স্মার্ট কার্ডের আওতায় আনা হবে
এম.মনছুর আলম, চকরিয়া :
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান আমাদের একটি স্বাধীন দেশ ও একটি মানচিত্র উপহার দিয়ে গেছেন।দেশ স্বাধীন না হলে জাতি হিসেবে আমরা এতদূর আগাতে পারতামনা।বঙ্গবন্ধু না হলে আমরা যে স্বাধীন দেশের নাগরিক সেটি আজ পরিচয় দিতে পারতাম না।১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট কালোরাতে একদল দেশদ্রোহী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান ও বঙ্গমাতাসহ তার পরিবারের অন্তত ২৪জন সদস্যকে নির্মামভাবে হত্যা করা হয়েছিলো। সেইদিন ঘাতকরা চেয়েছিলো বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে বাংলাদেশকে আবারো পাকিস্তানে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে। কিন্তু বাংলার মানুষ তা রুখে দিয়েছে।আজ রবিবার (১২আগষ্ট) সকাল ১১টায় কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার পরিষদ চত্বরে স্মার্ট আইডি কার্ড (জাতীয় পরিচয়পত্র) বিতরণের শুভ উদ্বোধনী অনুষ্টানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ উপরোক্ত এ কথা বলেন।
চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নূরুদ্দীন মুহাম্মদ শিবলী নোমানের সভাপতিত্বে ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা সাখাওয়াত হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্টিত স্মার্ট কার্ড বিতরণ অনুষ্টানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন- চট্টগ্রাম অঞ্চলের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান, কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (পর্যটন ও প্রটোকল) এস এম সরওয়ার কামাল, চকরিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ্ব জাফর আলম এম এ, চকরিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ফাঁসিয়াখালী ইউপি চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী, জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান ও পৌরসভা আওয়ামীলীগের সভাপতি জাহেদুল ইসলাম লিটু, পার্বত্য জেলা বান্দরবানের লামা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুরে জান্নাত রুমি, চকরিয়া উপজেলা পরিষদের মহিলা-ভাইস চেয়ারম্যান সাফিয়া বেগম শম্পা, পশ্চিম বড় ভেওলা ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বাবলাসহ প্রমুখ। এসময় জেলা ও উপজেলার সরকারী দপ্তরের বিভিন্ন কর্মকর্তা, পৌরসভার কাউন্সিলর, ১৮ইউনিয়ন পরিষদের চেযারম্যান- মেম্বারসহ রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্টানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, দেশ আজ অনেকদুর এগিয়ে গেছে। আজকে প্রতিটি ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ, প্রত্যেকের হাতে হাতে মোবাইল পৌছে গেছে। শেখ হাসিনার বলিষ্ট নেতৃত্বে দেশ এখন ডিজিটাল দেশে পরিণত হয়েছে। আমাদের আর পিছনে ফিরে যাওয়ার সুযোগ নেই। জাতীয় পরিচয়পত্র ছাড়া এদেশে কেউ চলতে পারবেনা। স্মার্ট আইডি কার্ড (পরিচয়পত্র) তৈরি করে দেয়া ডিজিটাল বাংলাদেশের এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন। মানুষের অবিচ্ছেদ্য অংশ হলো জাতীয় পরিচয়পত্র। এ স্মার্টকার্ডে দু’চোখের মনি ও দুই হাতের দশ আঙ্গুলের চাপ থাকবে।এতে ২৫ রকমের বৈশিষ্ট্য রয়েছে। দেশে মেট্রোরেল চালু হলে স্মার্ট কার্ড ছাড়া যাওয়া যাবেনা।এটি অত্যন্ত ভাল ভাবে সংরক্ষণ করতে হবে। তিনি আরো বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বেশ কিছু নির্বাচনী এলাকায় ইভিএমের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ করা হবে।পরবর্তীতে উপজেলা, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে ইভিএম মাধ্যমে ভোট গ্রহণের আওতায় নিয়ে আসা হবে। আগামী অক্টোবরে জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষনা করা হবে এবং ডিসেম্বর দিকে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্টিত হবে। বাংলাদেশের নির্বাচনে কোথাও শতভাগ ভোট গ্রহণ হয়না। সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভা নির্বাচনে দেখাগেছে ৬৫% অধিক ভোট গ্রহণ হয়নি। বিদেশে যারা বসবাস করে তাদেরকে স্মার্ট কার্ডের আওতায় আনা হবে। এজন্য নির্বাচন কমিশন বিদেশে গিয়ে প্রবাসীদের স্মার্ট কার্ডের আওতায় নিয়ে আসবে বলেও জানান তিনি।অনুষ্টানের পরে প্রধান অতিথি সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তি, সাংবাদিক, প্রতিবন্ধী ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্টি ও জেলে সম্প্রদায়ের বিভিন্ন লোকজনের হাতে স্মার্ট কার্ড তুলে দিয়ে স্মার্ট কার্ড বিতরণ অনুষ্টানের আনুষ্টানিক শুভ উদ্বোধন করেন।
উল্লেখ্য, কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ১৮টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভাসহ ১৯টি কেন্দ্রে ১৬ আগস্ট থেকে ২২ নভেম্বর পর্যন্ত এ স্মার্ট কার্ড বিতরণ করা হবে।
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো: সাখাওয়াত হোসেন বলেন, উপজেলায় মোট ভোটার রয়েছেন ২লাখ ৮৪ হাজার ৪শত ১১ জন। তৎমধ্যে স্মার্ট কার্ড পাবেন ২লাখ ৬৯ হাজার ৩শত ৮১ জন। ১৯৯৯ সালের ১ জানুয়ারী থেকে পরবর্তী সময়ে জন্ম নিয়ে ভোটারের আওতায় আসা নতুন ভোটাররা এখন স্মার্ট কার্ড পাবেননা। তাদেরকে সংশিষ্ট পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে পরে লেমিনেটিং করা জাতীয় পরিচয়পত্র দেয়া হবে।তিনি আরো বলেন, স্মার্ট কার্ড নিতে হলে স্ব-স্ব কেন্দ্রে গিয়ে প্রত্যেক ভোটারের দুই হাতের দশ আঙ্গুলের ছাপ এবং দুই চোখের আইরিশ ইমেজ প্রদান করতে হবে।বর্তমান জাতীয় পরিচয়পত্র সংগে আনতে হবে। যারা এখনো জাতীয় পরিচয়পত্র পাননি তাদের নিবন্ধন স্লিপ নিয়ে আসতে হবে। নির্দিষ্ট তারিখ ও সময় অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রে স্বশরীরে উপস্থিত থাকতে হবে। একজনের স্মার্ট কার্ড অন্যজন নিতে পারবেনা। জাতীয় পরিচয়পত্র হারিয়ে গেলে সোনালী ব্যাংকে ৩শত ৬৮ টাকা (কোড নং-১৪২২৩০২) জমা দিয়ে পে-স্লিপ সাথে আনতে হবে। যারা স্লিপ হারিয়ে ফেলেছেন তারা ফরম নম্বর, ভোটর নম্বার এবং আইডি নম্বর সংগ্রহ করে স্মার্ট কার্ড সংগ্রহ করতে হবে।
পাঠকের মতামত: